সাইবার নিরাপত্তা
শপিং মলে মোবাইল নম্বর শেয়ার করা বাধ্যতামূলক নয়, জানালেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা
একবার মোবাইল নম্বর কোথাও ফাঁস হলে, বিভিন্ন সংস্থা ও ভুয়ো কল সেন্টার সেই ডেটা কিনে নিয়ে আপনাকে লোভনীয় অফার, লিঙ্ক ও স্কিমের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে পারে

সৌরভ চক্রবর্ত্তী ৩ আগস্ট, ২০২৫ : শপিং মলে গিয়ে কেনাকাটা করার সময় বিলিং কাউন্টারে মোবাইল নম্বর শেয়ার করতে বলা হলে, সেটা যে আপনার জন্য বাধ্যতামূলক নয়—এ তথ্য অনেকেই জানেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিল করার সময় ক্যাশ কাউন্টারে কর্মীরা অত্যন্ত গম্ভীর ভঙ্গিতে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর চেয়ে থাকেন। এমনকি অনেক সময় মনে হয়, যদি মোবাইল নম্বর না দেওয়া হয়, তাহলে বুঝি প্রিন্টেড বিল পাওয়া যাবে না।
কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মত বলছে, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। একজন সচেতন গ্রাহক হিসেবে আপনি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে পারেন যে আপনি আপনার মোবাইল নম্বর শেয়ার করতে রাজি নন।
কেন এই সতর্কতা প্রয়োজন?
প্রতিদিন আমাদের যেসব অবাঞ্ছিত স্প্যাম কল আসে, তার এক বড় অংশের জন্য দায়ী স্থানীয় শপিং মল কিংবা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলো।
সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলিতে দেখা যাচ্ছে, শপিং মলে আপনার দেওয়া মোবাইল নম্বর অর্থাৎ ‘ডেটাবেস’ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে।
বর্তমান সময়ে একটি মোবাইল নম্বর শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং সেটি সংযুক্ত--
আধার নম্বরের সঙ্গে
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে
প্যান কার্ডের সঙ্গে
নানা ধরনের OTP যাচাইকরণ ব্যবস্থার সঙ্গে। অর্থাৎ, একবার নম্বর চলে গেলে—আপনার ব্যক্তিগত ও আর্থিক নিরাপত্তাও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।
প্রতারণামূলক কল কিভাবে আসছে?
একবার মোবাইল নম্বর কোথাও ফাঁস হলে, বিভিন্ন সংস্থা ও ভুয়ো কল সেন্টার সেই ডেটা কিনে নিয়ে আপনাকে লোভনীয় অফার, লিঙ্ক ও স্কিমের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে পারে। আপনি নিজেই ভাবেন, “আমার নম্বর ওরা পেল কোথা থেকে?” অথচ আপনি হয়তো ভুল করে নিজেই সেই নম্বর শেয়ার করেছিলেন।
কী করণীয়?
১. ক্যাশ কাউন্টারে স্পষ্ট জানিয়ে দিন—আপনি মোবাইল নম্বর দিতে চান না।
২. শপিং মলের অফার বা ডিসকাউন্ট শুধুমাত্র বিল নম্বরের ভিত্তিতেও দেওয়া যেতে পারে।
৩. আপনার অনুমতি ছাড়া কেউ আপনার ডেটা সংগ্রহ করতে পারে না—আইনেও তার সুরক্ষা রয়েছে।
৪. শপিং মল বা যেকোনও সংস্থার কাছ থেকে মেম্বারশিপ নেওয়ার আগে ভালভাবে শর্তপত্র পড়ে নিন।
সতর্ক হোন, নিরাপদ থাকুন
ব্যবসা যত বড় হোক, তথ্যের নিরাপত্তা কোনোভাবেই খর্ব করা যায় না। আপনি যদি সচেতন না হন, তবে আপনি নিজেই নিজের তথ্য ফাঁসের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন।
সতর্কতা শুরু হোক আপনার কাছ থেকেই। নিজের সুরক্ষার দায়িত্ব নিজের হাতেই তুলে নিন।
নিজে জানুন, অন্যদের জানাতে সাহায্য করুন।
এই প্রতিবেদনটি শেয়ার করুন—পরিবার ও বন্ধুদেরও সতর্ক করুন।

Comments