Murder
৫০ হাজার টাকায় 'সুপারি', স্বামীই ভাড়াটে খুনি দিয়ে গলা কাটাল স্ত্রীর! জঙ্গলে মিলল কঙ্কালসার দেহ
স্বামীই ভাড়াটে খুনির হাতে নৃশংস খুন স্ত্রীর! জঙ্গলে মিলল কঙ্কালসার দেহ

যশপাল সিং, ত্রিপুরা : দীর্ঘ চোদ্দ দিনের অপেক্ষার অবসান হলো এক হাড়হিম করা সত্যের পর্দাফাঁসে। বিলোনিয়া থেকে নিখোঁজ গৃহবধূ কণা দেবনাথ দাসের (৪৫) গলিত মৃতদেহ উদ্ধার হলো সোনামুড়ার কাশারী গভীর জঙ্গল থেকে। আর এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ যে তথ্য সামনে এনেছে, তা যেকোনো থ্রিলার সিনেমাকেও হার মানায়। জানা গেছে, নিছক নিখোঁজ নয়, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে 'সুপারি' দিয়ে নিজের স্ত্রীকেই নৃশংসভাবে খুন করিয়েছে স্বামী রাজু দাস। ঘটনার সূত্রপাত গত ২৮শে জুলাই। বিলোনিয়া সিএমও অফিস সংলগ্ন এলাকা থেকে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান কণা দেবী। তাঁর মেয়ে প্রীতি দেবনাথ বিলোনিয়া মহিলা থানায় মায়ের নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এরপরই তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তের গভীরে গিয়ে পুলিশ মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডের সূত্র ধরে গত সোমবার রাতে তিনজনকে আটক করে। এদের মধ্যে ছিলেন কণা দেবীর স্বামী রাজু দাস, বিলোনিয়ার রাম ঠাকুর পাড়ার বাসিন্দা দুলন দাস (২৮) এবং রাজনগর মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ মিয়া (৩৫)। দুলন দাস গত পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ছিল বলে জানা গেছে।
পুলিশি জেরার মুখে ভেঙে পড়ে অভিযুক্তরা খুনের কথা স্বীকার করে। তাদের জবানবন্দি অনুযায়ী, স্বামী রাজু দাসই তার স্ত্রীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য দুলনকে ৫০ হাজার টাকার 'সুপারি' দিয়েছিল। পূর্ব পরিচিত হওয়ায় দুলনই কণা দেবীকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে আনে। এরপর তাকে কাশারীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল মোহাম্মদ মিয়া। সেখানেই মাংস কাটার একটি ধারালো দা দিয়ে পিছন থেকে কণা দেবীর গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে মোহাম্মদ মিয়া। সোমবার রাতেই পুলিশ অভিযুক্তদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যার স্থান শনাক্ত করে। এরপর খবর দেওয়া হয় মৃতের মেয়ে প্রীতি দেবনাথকে। মঙ্গলবার সকালে জঙ্গলের ভেতর থেকে কণা দেবীর পচনশীল মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এই ঘটনায় গোটা বিলোনিয়া জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। যে স্বামীর উপর ভরসা করে একজন নারী জীবন কাটায়, সেই স্বামীই যে এমন নৃশংস ঘাতক হতে পারে, তা ভেবে শিউরে উঠছেন এলাকাবাসী। পুলিশ তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করে ঘটনার আরও গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

Comments